উপজেলা নির্বাচন: ছোট ভুলে মনোনয়নপত্র বাতিল নয়

উপজেলা নির্বাচন: ছোট ভুলে মনোনয়নপত্র বাতিল নয়
আসন্ন ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোটে প্রার্থীদের ছোটখাটো বা সারবত্তাহীন ভুলের জন্য মনোনয়নপত্র বাতিল না করতে রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এমনকি কোনো ভুল তাৎক্ষণিক সংশোধনের সুযোগ থাকলে তা প্রার্থীকে অবগত করে তা নিষ্পত্তির জন্যও বলেছে সংস্থাটি।

ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান ইতোমধ্যে নির্দেশনাটি সকল রিটার্নিং কর্মকর্তাদের পাঠিয়েছেন।
নির্দেশনায় বলা হয়েছে, উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হলে সংশ্লিষ্ট উপজেলার যে কোনো ভোটার এলাকার ভোটার তালিকায় নাম থাকতে হবে। ফলে মনোনয়নপত্রে প্রার্থী ভোটার তালিকায় ক্রমিক নম্বর, ভোটার নম্বর ও জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বরও লিপিবদ্ধ করতে হবে। ভোটার তালিকায় অনেক প্রার্থীর নামের বানান অথবা পিতার নাম, স্বামীর নাম ঠিকানা বা এ সংক্রান্ত তথ্য সঠিকভাবে নাও থাকতে পারে। ভোটার তালিকায় এ ধরনের ভুল অনেকের দৃষ্টি গোচর হওয়া সত্ত্বেও প্রয়োজনীয় সংশোধন করা সম্ভব হয়নি। শুদ্ধভাবে প্রার্থীর নামসহ অন্যান্য তথ্য প্রদান করতে গিয়ে ভোটার তালিকায় উল্লেখিত নাম বা অন্যান্য তথ্যের সাথে হুবহু নাও মিলতে পারে। এ ধরনের অমিলের কারণে মনোনয়নপত্র বাতিল করা যাবে না।
এছাড়া মনোনয়নপত্রে ভোটার তালিকায় ক্রমিক নং, ভোটার নম্বর, ভোটার এলাকার নাম বা জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর লিপিবদ্ধকরণে কোনো ভুল করলেও মনোনয়নপত্র বাতিল করা যাবে না। অনুরূপভাবে প্রস্তাবকারী ও সমর্থনকারীর ক্ষেত্রেও উক্তরূপ ভিন্নতা ও শুদ্ধিকরণ গ্রহণযোগ্য হবে। উল্লেখিত ক্ষেত্রে প্রার্থীর বা প্রস্তাবকারী বা সমর্থনকারীর নামের বানান ও তথ্যাদি যাচাইয়ের জন্য প্রার্থীর বা প্রস্তাবকারী বা সমর্থনকারীর এসএসসি পাশের সার্টিফিকেট বা অন্য কোনো সার্টিফিকেট অথবা স্বীকৃত কোনো পরিচয়পত্র দেখে নিশ্চিত হতে হবে।

অন্যদিকে মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের সময় ছোটখাট ত্রুটির জন্য কোনো মনোনয়নপত্র বাতিল করা যাবে না। যদি বাছাইয়ের সময় এমন কোনো ত্রুটি বিচ্যুতি নজরে আসে যা তাৎক্ষণিকভাবে সংশোধন সম্ভব, তা হলে মনোনয়নপত্র দাখিলকারীর দ্বারা তা সংশোধন করিয়ে নিতে হবে। মনোনয়নপত্র গ্রহণ অথবা বাতিল প্রসঙ্গে রিটার্নিং অফিসারের সিদ্ধান্ত মনোনয়নপত্রের নির্দিষ্ট স্থানে লিপিবদ্ধ করতে হবে। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা, ২০১৩ এর বিধি ১৭ এর উপ-বিধি (৩)(ই) অনুসারে ভোটার তালিকার কোনো অন্তর্ভুক্তির শুদ্ধতা অথবা বৈধতার প্রশ্নে কোনো অনুসন্ধান চালানো যাবে না। তবে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, হলফনামায় উল্লিখিত কোনো তথ্য পরিবর্তন বা সংশোধন করা যাবে না।
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রিটার্নিং কর্মকর্তারা অনেক সময় ছোটখাটো ভুলে মনোনয়নপত্র বাতিল করে দেন। পরবর্তীতে দেখা যায় আপিল করে সংশ্লিষ্টরা প্রার্থিতা ফিরে পান। এতে ব্যালট পেপার ছাপাতে জটিলতা দেখা দেয়। অনেক সময় ছাপানো ব্যালট পেপার বাতিল করে নতুন করে কোনো কোনো প্রার্থীকে অন্তর্ভূক্ত করে ব্যালট পেপার ছাপাতে হয়। এতে ব্যাপক অর্থের অপচয়ের সঙ্গে জটিলতা সৃষ্টি হয়। তাই এমন নির্দেশনা দিয়েছে ইসি।
তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৮ মে প্রথম ধাপে ১৫২ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ১৫ এপ্রিল। মনোনয়নপত্র বাছাই ১৭ এপ্রিল। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ১৮ থেকে ২০ এপ্রিল। আপিল নিষ্পত্তি ২১ এপ্রিল, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২২ এপ্রিল। প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল।
নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিয়োগ করা হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দায়ের করা আপিল আবেদন নিষ্পত্তি করবেন আপিল কর্তৃপক্ষ হিসেবে জেলা প্রশাসক।
মোট চার ধাপে অনুষ্ঠেয় ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পরবর্তীতে তিন ধাপের ভোটগ্রহণ ২৩ ও ২৯ মে এবং ৫ জুন অনুষ্ঠিত হবে। দেশে মোট উপজেলার সংখ্যা ৪৯৫টি।
আপনার মন্তব্য দিন

প্রকাশিত মন্তব্য

বাংলাদেশ

পরিচালনা সম্পাদক: মোহাম্মদ মুজিবুল ইসলাম, বার্তা সম্পাদক: মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম ও সহ সম্পাদক: ড. মোঃ আশরাফুল ইসলাম (সজীব)

© 2024 Dainik Coxsbazar, All Rights Reserved.